Tourism fair inaugurated in Jhargram: শীতের হিমেল হাওয়া নামতেই ঝাড়গ্রাম শহরের কেন্দ্রস্থলে রবিবার খুলে গেল লালমাটির হাট— লোকসংস্কৃতি, শিল্পঐতিহ্য এবং জঙ্গলমহলের পরিচিতিকে সামনে রেখে আয়োজিত এই অনন্য মেলা এখন স্থানীয় মানুষের গর্ব। এ বছর পঞ্চম বর্ষে পা দিল এই হাট, যা ২০২১ সালে মাত্র কয়েকটি স্টল নিয়ে শুরু হলেও আজ ঝাড়গ্রামের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্রিক উৎসবে পরিণত হয়েছে।
রবীন্দ্র পার্কের সবুজ প্রান্তর জুড়ে সাজানো হয়েছে নানান রঙের স্টল। কোথাও টোকরি-বোনার নরম শব্দ, কোথাও কাঠখোদাই শিল্পীর হাতের ছন্দ, আবার কোথাও সাঁওতালি ঢোলের তালে নেচে উঠছে জঙ্গলমহলের আত্মা। আঁদরাকাঠের অলংকার, দস্তার কাজ, মাটির গয়না, বাঁশের হস্তশিল্প— প্রতিটি সামগ্রীই যেন নিজের মধ্যে বহন করছে লালমাটির ভূগোল আর মানুষের ছোঁয়া। পাশাপাশি রয়েছে আদিবাসী রান্নার সুগন্ধ— ছাতু, মহুয়া, বিভিন্ন বনজ খাদ্য ও ঐতিহ্যবাহী পিঠে।

এই হাটের সবচেয়ে বড় শক্তি এর সম্পূর্ণ মহিলা-পরিচালিত সংগঠন। স্থানীয় নারী-উদ্যোক্তাদের হাত ধরে তৈরি হয়েছে স্বনির্ভরতার নতুন অধ্যায়। মেলার মানুষের ভিড়, বিক্রিবাটা বৃদ্ধি এবং বাইরের পর্যটকদের আগমনে তাদের আয়ের পরিধি যথেষ্ট বেড়েছে। উদ্যোক্তাদের কথায়, “লালমাটির হাট শুধু মেলা নয়, আমাদের জীবনের ভরসা। এখান থেকেই আমরা নতুন স্বপ্ন দেখি।”

রবিবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বন দফতরের প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। তিনি বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখে শিল্পীদের কাজের প্রশংসা করেন। বলেন, “জঙ্গলমহলের শিল্প-সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে লালমাটির হাট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এই উদ্যোগকে আরও বড় পরিসরে পৌঁছে দিতে রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”লালমাটির রঙ, লোকগানের সুর, আদিবাসী শিল্পের ছোঁয়া আর শীতের পিঠেপুলির গন্ধ— সব মিলিয়ে ঝাড়গ্রামের লালমাটির হাট এবারও শীতের পর্যটন-নগরীর প্রধান আকর্ষণ হয়ে উঠেছে।



