Netanyahu cancels India visit over security concerns over Delhi blasts:ভারত–ইজরায়েল সম্পর্ক গত কয়েক বছরে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি, কৃষি, সন্ত্রাসদমন—বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশই পরস্পরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। ২০১৮ সালে শেষবার ভারত সফরে আসেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেই সফরের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক যোগসূত্র আরও দৃঢ় হয়েছে। আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতেও একে অপরের পাশে থেকেছে ভারত ও ইজরায়েল। পহেলগাঁও হামলার পর নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করে সমবেদনা জানানোর মতো ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতাও ছিল দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে।চলতি বছরের ডিসেম্বরে আবারও ভারত সফরে আসার কথা ছিল নেতানিয়াহুর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক, দ্বিপাক্ষিক আলোচনার নতুন দিশা, এবং সম্পর্ক আরও জোরদার করার বেশ কিছু পরিকল্পনা ছিল তাঁর। শুধু তাই নয়, ইজরায়েলি সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, মার্কিন বাণিজ্য নীতি ও শুল্কবিধি নিয়ে মোদিকে বিশেষ কিছু পরামর্শ দিতেও চেয়েছিলেন তিনি।কিন্তু হঠাৎ করেই পরিস্থিতি বদলে যায়। দিল্লিতে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১৫ জনের মৃত্যু হওয়ার পর দেশজুড়ে নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন ওঠে। সেই ঘটনার জেরে শেষ মুহূর্তে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর ভারত সফর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে বহুবার তাঁর সফরসূচি পিছিয়ে গিয়েছে। এপ্রিলের সফর বাতিল হয়, পরে ৯ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত একদিনের সফরও ইজরায়েলের নির্বাচন থাকায় বাতিল হয়। শেষ পর্যন্ত ডিসেম্বরেই সফর নিশ্চিত করেছিলেন তিনি, কিন্তু দিল্লির বিস্ফোরণের পর নিরাপত্তা পরিস্থিতি আর অনুমতি দেয়নি।ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনও না এলেও, কূটনৈতিক সূত্রের মতে, ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে। বিস্ফোরণের তদন্তে দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। দিল্লি পুলিশ ও কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলি সম্ভাব্য নিরাপত্তা ত্রুটি খুঁটিয়ে দেখছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।রাজধানী দিল্লির বাসিন্দাদের মধ্যে বিস্ফোরণকে ঘিরে আতঙ্ক এখনও কাটেনি। সাধারণ মানুষের মতে, নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটি যদি এত বড় মাপের মৃত্যুর কারণ হয়, তবে তা আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে বাধ্য।
আন্তর্জাতিক অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই যে রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব—তাও অনেকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন।বিশ্লেষকদের মতে, নেতানিয়াহুর এই সফর ভারত–ইজরায়েল সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। বিশেষত প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগ, সন্ত্রাসদমন কৌশল, বাণিজ্য–নীতি—সব কিছুতেই নতুন দিশা আসার সম্ভাবনা ছিল।
একই সঙ্গে নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড মূল্যও ‘ভারত সফর’-এর মাধ্যমে আরও বাড়ত বলে মত বিশেষজ্ঞদের।কিন্তু দিল্লি বিস্ফোরণ পরিস্থিতিকে আমূল বদলে দিয়েছে। বিশ্ব রাজনীতিতে নিরাপত্তা একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। ফলে এই ঘটনায় ভারতের রাজধানী নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে পারে।ইজরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার হলে ভবিষ্যতে আবার সফরসূচি তৈরি করা হতে পারে। তবে ঠিক কবে, তা এখনও অনিশ্চিত। ভারত ও ইজরায়েল দুই দেশই কূটনৈতিক স্তরে যোগাযোগ বজায় রেখে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবে।



