Wednesday, September 10, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যঅক্ষরেখা ও ঘূর্ণাবর্তে রাজ্যজুড়ে ঝড়-বৃষ্টি

অক্ষরেখা ও ঘূর্ণাবর্তে রাজ্যজুড়ে ঝড়-বৃষ্টি

Thunderstorms and rains across the state in axial and cyclonic circulation:বর্ষার সময় মানেই বাংলার আবহাওয়ায় নানা অস্থিরতা। কখনও অঝোর বৃষ্টি, কখনও আবার বিরক্তিকর গরম। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। মৌসুমী অক্ষরেখা, বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণাবর্ত আর প্রচুর জলীয় বাষ্প মিলিয়ে রাজ্যের আকাশ যেন ঝড়-বৃষ্টির দখলে। আবহাওয়াবিদদের মতে, একসঙ্গে একাধিক আবহাওয়াগত কারণে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক প্রভাব পড়তে চলেছে। এর ফলেই দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ—দুই জেলাতেই ভিন্ন ভিন্ন আবহাওয়ার ছবি দেখা যাচ্ছে।আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, মৌসুমী অক্ষরেখা বর্তমানে দক্ষিণবঙ্গের উপকূল ঘেঁষে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। রাঁচি থেকে বাঁকুড়া এবং দীঘা হয়ে এই অক্ষরেখা বিস্তৃত হয়েছে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত। এর পাশাপাশি উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে উড়িষ্যা উপকূলে তৈরি হয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। শুধু তাই নয়, দক্ষিণ উড়িষ্যা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তর উপকূলের কাছেও আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত সক্রিয় হয়েছে।অন্যদিকে পূর্ব বিহার এবং তার আশপাশেও একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। এই একাধিক ঘূর্ণাবর্ত আর মৌসুমী অক্ষরেখার প্রভাবে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প রাজ্যে ঢুকছে। ফলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বুধবার দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়িতে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বিক্ষিপ্ত বজ্রবিদ্যুৎসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে রাজ্যের প্রায় সব জেলাতেই। সঙ্গে বইবে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগের ঝোড়ো হাওয়া।রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরকে সতর্ক রাখা হয়েছে। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি জেলাগুলিতে ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। সেই কারণে জেলা প্রশাসনগুলিকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নদীর জলস্তর বেড়ে গেলে যাতে তড়িঘড়ি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেচ দফতরকেও।দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে যেখানে আপাতত গরম ও অস্বস্তি বজায় রয়েছে, সেখানে বৃষ্টি নামার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে নাগরিকদের সতর্ক করা হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী বুধবার থেকে বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা বাড়তে পারে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়।উত্তরবঙ্গের বাসিন্দাদের মধ্যে ইতিমধ্যেই দুশ্চিন্তা বাড়ছে। একদিকে বৃষ্টি কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ হলেও অতিবৃষ্টি হলে ফসল নষ্টের আশঙ্কা রয়েছে।

Screenshot 2025 06 12 154841

জলপাইগুড়ির এক চাষি জানালেন, ‘‘বৃষ্টি হলে অবশ্যই খেতের উপকার হবে, কিন্তু অতি ভারী বৃষ্টি হলে আমন ধান ডুবে যাওয়ার ভয় থেকেই যায়।’’দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে বসবাসকারী মানুষজনও চিন্তিত। পাহাড়ে বর্ষার সময় প্রতিবারই ভূমিধস বড় আতঙ্কের কারণ হয়। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘প্রতিবারের মতো এবারও যদি টানা বৃষ্টি হয়, তাহলে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখা মুশকিল হয়ে যায়।’’অন্যদিকে দক্ষিণবঙ্গের মানুষজন ভুগছেন প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্রতার চাপে। কলকাতায় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের উপরে রয়েছে। গরমে নাজেহাল শহরবাসী এখন বৃষ্টির অপেক্ষায়। এক অফিসযাত্রীর কথায়, ‘‘ট্রেনে উঠতেই শরীর ভিজে যাচ্ছে ঘামে। যত তাড়াতাড়ি বৃষ্টি নামবে, ততই স্বস্তি মিলবে।’’আগামী সপ্তাহ জুড়েই রাজ্যে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি চলবে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে সোমবার পর্যন্ত। অন্যদিকে দক্ষিণবঙ্গে বুধবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে বলে পূর্বাভাস।এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় ভ্রমণ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে পর্যটকদের। নদীর তীরে বা জলাশয়ের পাশে বাসিন্দাদেরও সজাগ থাকতে নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments