Saturday, July 12, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্যবাংলার উন্নয়নকে স্বীকৃতি নীতি আয়োগের

বাংলার উন্নয়নকে স্বীকৃতি নীতি আয়োগের

NITI Aayog recognizes Bengal’s development:সম্প্রতি প্রকাশিত কেন্দ্রীয় নীতি আয়োগের ‘স্টেট সামারি রিপোর্ট ফর ওয়েস্ট বেঙ্গল’ ঘিরে জোর আলোচনায় উঠে এসেছে বাংলার সামগ্রিক উন্নয়ন। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রথম সারির সংস্থা নিজেই স্বীকার করে নিয়েছে যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার গত কয়েক বছরে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করেছে। রিপোর্ট বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে পশ্চিমবঙ্গে বার্ষিক বেকারত্বের হার ছিল মাত্র ২.২ শতাংশ, যেখানে গোটা দেশের গড় ছিল ৩.২ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের ১০০ দিনের কাজ বন্ধ থাকা সত্ত্বেও রাজ্যের নিজস্ব প্রকল্প, কর্মশ্রী কর্মসূচি, শিল্পোন্নয়ন এবং সামাজিক প্রকল্পগুলির সফল বাস্তবায়নই এই সাফল্যের প্রধান কারণ। বিশেষ করে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’, ‘স্বাস্থ্যসাথী’, ‘কৃষক বন্ধু’, ‘রূপশ্রী’, ‘কন্যাশ্রী’, ‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’-এর মতো একাধিক প্রকল্প মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বাস্তব প্রভাব ফেলেছে। নীতি আয়োগের এই রিপোর্টে বাংলার উন্নয়ন নিয়ে স্বীকৃতি পাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই সাফল্য প্রতিটি বাঙালির, কেন্দ্র যখন আমাদের কাজের প্রশংসা করে, তখন বিরোধীদের মিথ্যাচার ভেঙে পড়ে।

” রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “বিজেপির প্রপাগান্ডার মুখে ঝামা ঘষে দিল এই রিপোর্ট।” অন্যদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “রিপোর্টে ভুল মানচিত্র ছাপানোই বলে দিচ্ছে কতটা তাড়াহুড়োয় তৈরি হয়েছে এটা।” কারণ রিপোর্টের প্রথম পাতায় ভারতের মানচিত্রে পশ্চিমবঙ্গের জায়গায় বিহারকে চিহ্নিত করা হয়, যা নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে সামাজিক মাধ্যমে। যদিও কেন্দ্রীয় সংস্থা পরে সেই ভুলের দায় স্বীকার করে এবং সংশোধনের আশ্বাস দেয়। তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ বললেও, বিরোধীরা একে ‘অক্ষমতার প্রতিচ্ছবি’ বলেই ব্যাখ্যা করে। কিন্তু এসব বিতর্কের বাইরেও এই রিপোর্টে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হল—বাংলার উন্নয়ন এখন আর কথার কথা নয়, তা সরকারি তথ্যেও স্বীকৃত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রিপোর্ট ভবিষ্যতে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। কারণ উন্নত জীবনযাত্রা, কম বেকারত্ব ও সুশাসনের স্বীকৃতি কোনও রাজ্যের আন্তর্জাতিক মর্যাদা ও বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়। তথ্য বলছে, বাংলায় মাথাপিছু আয় গত পাঁচ বছরে ৪৬% বেড়েছে, যেখানে জাতীয় গড় বৃদ্ধি ৩৭%।

full

এই রিপোর্ট সামনে আসার পর রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া। কিছু রাজ্য যেখানে জনসাধারণের জীবনমান, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কাজের ক্ষেত্রে এখনও হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গ নিজের আত্মবিশ্বাসী অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক যেমন স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্পোন্নয়ন, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগগুলিও এই রিপোর্ট সামনে আসার পর নিজেদের কাজের মূল্যায়নে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে। একাংশের মতে, এই রিপোর্ট আগামী বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম প্রচার হাতিয়ার হয়ে উঠবে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বাংলায় স্বাস্থ্য পরিসেবার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের বিস্তার এবং বিনামূল্যে চিকিৎসা সুবিধা দেশের মধ্যে অন্যতম সফল উদ্যোগ। একইভাবে ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্প কৃষকদের আর্থিক সহায়তা এবং শস্য বিমা দুটোই সহজলভ্য করেছে। এছাড়া মেয়েদের শিক্ষায় কন্যাশ্রী ও রূপশ্রী প্রকল্প জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরেও বহু পুরস্কার অর্জন করেছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments