Cargo ship damaged in missile attack:মিসাইল হানায় ছারখার পণ্যবাহী জাহাজজীবন যেন এক মুহূর্তেই বদলে যায় যুদ্ধের উত্তাপে। লোহিত সাগরের উপর দিয়ে যখন সুয়েজ খালের দিকে এগোচ্ছিল ‘ইটারনিটি সি’ নামের একটি পণ্যবাহী জাহাজ, তখন কেউ ভাবতেও পারেনি—একটি মুহূর্তই ছিনিয়ে নেবে চারজন নাবিকের প্রাণ, তলিয়ে যাবে জাহাজ, নিখোঁজ হবেন আরও ১৫ জন। আর সেই দৃশ্যই এখন ভাইরাল ইন্টারনেট জুড়ে। বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে, বিশেষত বাণিজ্যিক জাহাজ পরিবহণ নিরাপত্তা নিয়ে।ঘটনার সূত্রপাত বুধবার, যখন ব্রিটেনের ‘United Kingdom Maritime Trade Operations’ (UKMTO) নিশ্চিত করে—‘ইটারনিটি সি’ নামক মালবাহী জাহাজটি ইয়েমেনের হাউথি গোষ্ঠীর রকেট হামলার শিকার হয়েছে। জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকটি সশস্ত্র হাউথি নৌকা ঘিরে ধরে জাহাজটিকে এবং মুহূর্তেই শুরু হয় মিসাইল বর্ষণ। একাধিক রকেট হামলার পর ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে জাহাজটি, যার ফলে মুহূর্তের মধ্যেই সেটি ডুবে যায় লোহিত সাগরে।
এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে চারজন নাবিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত ১৫ জন। মার্কিন সামরিক বাহিনীর দাবি, হাউথি গোষ্ঠী ওই জাহাজের বহু নাবিককে বন্দি করেছে এবং তাদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বোঝাতে ইউএস নেভির এক কর্নেল জানান, “এটি শুধু একটি হামলা নয়, এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজ পরিবহণ ব্যবস্থার উপর সরাসরি আঘাত।”স্মরণযোগ্যভাবে, এই ঘটনাটি এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়। রবিবার রাতেও ইয়েমেনের হাউথি নিয়ন্ত্রিত বন্দর শহর আল হুদায়েদার দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে দুইটি পণ্যবাহী জাহাজে হামলা চালানো হয়েছিল। সেসময় বিস্ফোরক বোঝাই ড্রোনবোট ব্যবহার করে জাহাজে আঘাত হানা হয়। সেই হামলাতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

এই ধরনের ধারাবাহিক হামলায় লোহিত সাগরে চলাচলকারী জাহাজগুলোর মধ্যে প্রবল আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থাগুলির তরফে জানানো হয়েছে, জরুরি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে পরিস্থিতি আরও মারাত্মক রূপ নিতে পারে।বিশেষজ্ঞদের মতে, ইয়েমেনের হাউথি গোষ্ঠী এই ধরনের হামলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে। মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক অস্থিরতা, ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধ এবং মার্কিন-ইজরায়েল জোটবিরোধী মনোভাবের ফলেই এই আগ্রাসন বৃদ্ধি পাচ্ছে।বাণিজ্যিক দিক থেকেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। লোহিত সাগর দিয়ে প্রতিদিন প্রচুর পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল করে, যেগুলি ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। এই হামলা সেই জাহাজ চলাচলকে প্রশ্নচিহ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি শিপিং কোম্পানি তাদের রুট বদল করেছে বা সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে চলাচল।