Low pressure over Gangetic West Bengal, heavy rain likely in South Bengal: গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হয়েছে একটি সক্রিয় নিম্নচাপ, যার সরাসরি প্রভাব পড়তে চলেছে দক্ষিণবঙ্গের উপকূল ও পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। আবহাওয়া দফতরের তরফে সোমবার সকাল থেকেই একাধিক সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সমুদ্রের পরিস্থিতি রীতিমতো উত্তাল, ফলে বাংলা ও ওড়িশার উপকূলবর্তী অঞ্চলের মৎস্যজীবীদের সোমবার দিন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং মধ্য বঙ্গোপসাগরে না যেতে বিশেষভাবে নিষেধ করা হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, নিম্নচাপের জেরে সমুদ্রে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে, এবং সেই হাওয়ার গতি কিছু কিছু জায়গায় গিয়ে পৌঁছাতে পারে ৫০ কিমি/ঘণ্টাতেও। এর ফলে ট্রলার বা ছোট মাছ ধরার নৌকার ক্ষেত্রে বড় বিপদের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
এদিকে এই নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে সোমবার ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ার কিছু অংশে বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শহর কলকাতায় সকাল থেকেই আকাশ মেঘলা, মাঝে মাঝে দু-এক পশলা বৃষ্টির সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৮৩ থেকে ৯২ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে, যার ফলে গরম ও আদ্রতার দাপটে নাগরিকদের অস্বস্তি আরও বেড়েছে। আজকের দিনে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩১ ডিগ্রির আশেপাশে।উত্তরবঙ্গের দিকে অবশ্য বৃষ্টির সম্ভাবনা অনেকটাই কম, তবে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও কালিম্পং এই পাঁচটি জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ওই অঞ্চলে ভূমিধস বা বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা আপাতত নেই বলেই জানানো হয়েছে।

কলকাতা পুরসভা ইতিমধ্যেই জল জমা রোধে বিশেষ তৎপর হয়েছে। শহরের নিচু এলাকাগুলোর ড্রেন পরিস্কার, পাম্প স্টেশন সক্রিয় রাখা, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মোকাবিলায় প্রস্তুতি ইত্যাদি নেওয়া হয়েছে। কলকাতা কর্পোরেশনের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের আধিকারিক মৃদুল দত্ত জানিয়েছেন, “আমরা গতকাল রাত থেকেই প্রস্তুত আছি। যেকোনও সময় বৃষ্টি বাড়লে যাতে জল জমে না থাকে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষ করে বেহালা, টালিগঞ্জ, হঠাৎ বাড়ি, নেতাজিনগর, যাদবপুর এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।”রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই বিপর্যয় মোকাবিলা দল, এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ-এর টিমকে স্ট্যান্ডবাইয়ে রেখেছে। বিভিন্ন জেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে, যাতে কোথাও গাছ পড়া, রাস্তা বন্ধ, জল জমে যাওয়া বা কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এই নিম্নচাপটি যদি আরও শক্তিশালী হয়, তাহলে পরবর্তী ৩-৪ দিন দক্ষিণবঙ্গে একটানা ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে নদীগুলির জলস্তর হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে, যা প্লাবনের আশঙ্কাও বাড়িয়ে দিতে পারে। পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া—এই জেলাগুলিতেও রাত্রিবেলা থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে।