Rain likely across the state from Thursday:বিগত কয়েকদিনে দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা বেড়েছিল রেকর্ড ছুঁই না, গরমে হাঁসফাঁস করে ওঠছিল মানুষ, কিন্তু শুক্রবার হাওয়া অফিসের রিপোর্ট এল নতুন খবর—বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যজুড়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, আর শুক্রবার থেকে তা আরও বেড়ে যেতে পারে। আপাতত বুধবার পর্যন্ত কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসে জলীয় বাষ্প ৭২ থেকে ৯০ শতাংশ, যার ফলে বাড়ছে অস্বস্তি; তবে এই মেঘলা আবহাওয়ায় জুনের মাঝামাঝি মৌসুমি বায়ু ফের সক্রিয় হতে চলেছে, অর্থাৎ বর্ষার দফার সুচনা হতে পারে। উত্তরবঙ্গে ইতিমধ্যেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে—দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে; এই পরিস্থিতি শুক্রবার দক্ষিণবাংলাতেও ছড়িয়ে পড়বে, দিলেগুলোতে বিক্ষিপ্ত বজ্রবিদ্যুৎ বৃষ্টি দেখা দিতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে হাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল থেকেই সারা রাজ্যে আংশিক মেঘলা আকাশ থাকবে, এবং বাংলাদেশের উপকূলবর্তী নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হতে পারে—বিশেষ করে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামে।
এই আবহাওয়ার পরিবর্তন মানুষের দৈনন্দিন জীবনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। দীর্ঘদিন গরম-আর্দ্রতার আক্রমণে হাঁসফাঁস করা মানুষরা বর্ষার একফোঁটা রোদ্দুরেও স্বস্তি পায়; স্কুল কলেজে ছেলেমেয়েরা কমোপরে মাঠে দৌড়াতে পারে, এডুকেশন মঞ্চ ফিরে পেতে পারে প্রাণ; কৃষকরা মাটিতে চারা রোপণ আর বীজ পরিচর্যা নিয়ে আশার মুখে তাকিয়ে দিনক্ষণ গুনছেন। হাওড়ার একজন কৃষক জানালেন, “আমরা তো ভেবেছিলাম জলই পাবে না দিঘ মাটি, বর্ষার বৃষ্টির জন্য এখনই উদগ্রীব।” জলপাইগুড়ির এক দার্জিলিং বাসিন্দা বললেন, “বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি সত্যিই অত্যন্ত উপকারী—মাটির গরম কমবে, খরা উপশম পাবে।” এদিকে কলকাতার মানুষের জীবনেও কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে—বাস্তবিক রোদে হাঁটা-চলা কমেছে, রিকশাওয়ালা ও ফুটপাত বাজার শিল্পীরা অভিভূত। তবে বৈদ্যুতিক ও রাস্তার ক্ষয়ক্ষতি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে—রাস্তার অবকাঠামো নাজুক হলে জল জমে যানজট তৈরি হতে পারে, আর বৈদ্যুতিক সংস্হায় ঝড়বৃষ্টি হলে যা-ই ঘটুক না কেন, সেটা ক্ষমার বাইরে চলে যায়।

হাওয়া অফিসের প্রধান আবহাওয়াবিদ ডাঃ সোমনাথ মন্ডল বলেন, “বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হলে রাজ্যে এক লগ্নে গরম থিতিয়ে এসে তার জায়গায় আসবে প্রাকৃতিক শীতলতা। তবে জানিয়ে রাখা দরকার, রাস্তা বা বাঁধে জল জমে গেলে আধা ঘণ্টার মধ্যেই কমিউনিকেশন লাইন খারাপ হতে পারে। তাই প্রশাসনের উচিত পূর্বেই জল নির্ঝর স্তর নিরীক্ষা ও নালাচাষা এলাকা খালি রাখা।” স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যে সতর্কতা নিযুক্ত করেছে—পূর্বাঞ্চলের পুরসভার ড্রেন চেক করা হচ্ছে, হাওড়ায় রাস্তার ঝুঁকিপূর্ণ অংশে ব্লকডাউন নির্মাণ করা হচ্ছে, এবং কালিগঞ্জ বিধানসভা এলাকার গ্রামপঞ্চায়েতগুলি জনসাধারণকে ইতিবাচকভাবে এ বিষয়ে আরো সচেতন করার জন্য জনসভা হচ্ছে।শিক্ষা, কৃষি, পরিবেশ—তিন ক্ষেত্রেই এই বৃষ্টির সম্ভাবনা ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, তবে তার সাথে জলাবদ্ধতার ঝুঁকি ও বৈদ্যুতিক বিভ্রাটে মানুষের জীবন ব্যহত হওয়ার আশঙ্কাও আছে। তাই প্রশাসনের তরফে বলা হচ্ছে—রাস্তার ডাম্পিং এলাকায় সর্তকতা থাক, বিদ্যুৎসরকারীরা প্রস্তুত থাকুন, এবং জনগণকে যেন বর্ষার নেতিবাচক প্রভাব থেকে রক্ষা করা যায় তার দিকে নজর রাখতে হবে।