Monday, May 26, 2025
Google search engine
Homeটপ 10 নিউসবিদেশইজরায়েলের চাপে বিপর্যস্ত হামাস

ইজরায়েলের চাপে বিপর্যস্ত হামাস

Hamas is devastated by Israeli pressure : ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের মাটিতে হামাসের আকস্মিক হামলার পর থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ আজও থামেনি, বরং দিনে দিনে তা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর লাগাতার আক্রমণে হামাসের ভিত প্রায় ধসে পড়েছে। সূত্রের খবর, সংগঠনের আর্থিক অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে যোদ্ধাদের বেতন দেওয়ার মতো অর্থও নেই হামাসের হাতে। গত চার মাসে হামাস মাত্র ২৪০ মার্কিন ডলার সংগ্রহ করতে পেরেছে, যা সংগঠনের ইতিহাসে নজিরবিহীন। এই আর্থিক সংকটের ফলে একের পর এক যোদ্ধা সংগঠন ছেড়ে চলে যাচ্ছে, নেতৃত্বে দেখা দিয়েছে চরম ভাঙন। ইজরায়েলের গোপন অভিযানে ইতিমধ্যেই হামাসের একাধিক শীর্ষ নেতাকে হত্যা করা হয়েছে, ফলে নেতৃত্বের অভাবে সংগঠন কার্যত ছিন্নভিন্ন।

13a6ea369f43982dfdb1e217de8e4574

এই সংঘর্ষের প্রভাব পড়েছে গাজার জনজীবনে। ইজরায়েলের অবরোধ ও হামলায় ইতিমধ্যেই হাজার হাজার গাজাবাসী প্রাণ হারিয়েছেন। শিশুদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে চরম অপুষ্টি। জাতিসংঘের একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গাজার পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে, ত্রাণ না পৌঁছালে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হতে পারে প্রায় ১৪ হাজার শিশুর। ইজরায়েল দক্ষিণ গাজায় ত্রাণ পৌঁছানোর অনুমতি দিলেও, উত্তর গাজা এখনও অবরুদ্ধ। গত শুক্রবার গাজায় ইজরায়েলের হামলায় ৭৬ জন নিহত হন। শনিবারের অভিযানে মৃত্যু হয় আরও ৯ শিশুসহ দু’জন চিকিৎসকের। গাজার হাসপাতালগুলোতে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ৬৪% চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ৪৩% প্রয়োজনীয় ওষুধ বর্তমানে ‘স্টক জিরো’ অবস্থায় রয়েছে। এই সংকটের ফলে গাজার হাসপাতালগুলোতে শিশুদের অপুষ্টি ও রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না।

আন্তর্জাতিক মহল ইজরায়েলের এই কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ ইজরায়েলের ত্রাণ অবরোধকে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ ও ‘অসাধু’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি সরাসরি ইজরায়েলের প্রেসিডেন্ট হার্জগকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করেছেন। তবে ইজরায়েল দাবি করেছে, হামাস ত্রাণ সামগ্রী লুট করছে, তাই তারা ত্রাণ সরবরাহে বাধা দিচ্ছে। এই দাবি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে।

হামাসের আর্থিক সংকট ও নেতৃত্বের অভাব সংগঠনটিকে দুর্বল করে তুলেছে। তবে এর ফলে গাজার সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। ত্রাণের অভাবে শিশু, নারী ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। গাজার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সংকট, খাদ্য ও পানির অভাব, এবং নিরাপত্তাহীনতা সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।

এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত গাজায় অবিলম্বে ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং ইজরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যাতে তারা অবরোধ তুলে নেয়। এছাড়া, হামাস ও ইজরায়েলের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু করে সংঘর্ষ বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। গাজার জনগণের মানবাধিকার রক্ষা ও তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণে আন্তর্জাতিক মহলের সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments