Indian airspace remains closed to Pakistan:ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে ভারতের আকাশপথ পাকিস্তানি বিমানের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত আরও এক মাসের জন্য বাড়ানো হয়েছে। ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রক (Ministry of Civil Aviation) ২৩ মে একটি নতুন নোটাম (NOTAM) জারি করে জানিয়েছে যে, পাকিস্তানে নিবন্ধিত, মালিকানাধীন, পরিচালিত বা লিজে নেওয়া সব ধরনের বেসরকারি ও সামরিক বিমান ২৩ জুন পর্যন্ত ভারতের আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারবে না। এই সিদ্ধান্তের ফলে পাকিস্তানি বিমান সংস্থাগুলি ভারতের আকাশপথ ব্যবহার করতে পারবে না, যা তাদের ফ্লাইট পরিকল্পনা ও খরচে প্রভাব ফেলবে।
এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগামে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলা, যেখানে ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। এই ঘটনার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে, যার মধ্যে ইন্দাস জলচুক্তি স্থগিত করা, আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করা, কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করা এবং পাকিস্তানি বিমানের জন্য ভারতের আকাশপথ বন্ধ করা অন্তর্ভুক্ত ছিল। পাকিস্তানও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারতের বিমানের জন্য তাদের আকাশসীমা ২৪ জুন পর্যন্ত বন্ধ রেখেছে।
এই আকাশপথ নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলি, বিশেষ করে এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো এবং স্পাইসজেট, তাদের ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের ফ্লাইটগুলির জন্য বিকল্প রুট ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছে, যা ফ্লাইটের সময় ও খরচ বাড়িয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, দিল্লি থেকে টরন্টো ফ্লাইটের সময় প্রায় ২ ঘণ্টা বেড়েছে, এবং কিছু ফ্লাইটকে ভিয়েনা বা কোপেনহেগেন-এ refuel করতে হচ্ছে। এয়ার ইন্ডিয়া অনুমান করেছে যে, এই নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের বার্ষিক অতিরিক্ত খরচ প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার হবে, এবং তারা সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়েছে।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে সাধারণ যাত্রীদেরও ভোগান্তি বাড়ছে। ফ্লাইটের সময় বৃদ্ধি, টিকিটের দাম বৃদ্ধি এবং ফ্লাইট বাতিলের কারণে যাত্রীরা সমস্যায় পড়ছেন। বিশেষ করে উত্তর ভারতের যাত্রীরা, যারা ইউরোপ বা মধ্যপ্রাচ্যে ভ্রমণ করেন, তাদের জন্য এই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই আকাশপথ নিষেধাজ্ঞা কেবলমাত্র একটি সাময়িক পদক্ষেপ নয়, বরং এটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার একটি প্রতিফলন। যদি এই নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে এটি উভয় দেশের বিমান চলাচল, বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্কের উপর গভীর প্রভাব ফেলবে।

এই পরিস্থিতিতে, উভয় দেশের সরকারকে সংযম প্রদর্শন করে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে। কারণ, আকাশপথ নিষেধাজ্ঞা কেবলমাত্র একটি সাময়িক সমাধান, যা দীর্ঘমেয়াদে উভয় দেশের জন্যই ক্ষতিকর হতে পারে।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিমান চলাচল, বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠেছে। উভয় দেশের সরকারকে এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সংযম প্রদর্শন করে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে। কারণ, আকাশপথ নিষেধাজ্ঞা কেবলমাত্র একটি সাময়িক সমাধান, যা দীর্ঘমেয়াদে উভয় দেশের জন্যই ক্ষতিকর হতে পারে।