Monday, May 19, 2025
Google search engine
Homeঅন্যান্য'ISI এর সাথে সুসম্পর্ক', গ্রেফতার পাকিস্তানি গুপ্তচর

‘ISI এর সাথে সুসম্পর্ক’, গ্রেফতার পাকিস্তানি গুপ্তচর

Pakistani spy arrested for ‘good relations with ISI’: রবিবার গোটা দেশ জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়াল এক চমকপ্রদ ঘটনার জেরে। উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ জেলা থেকে সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড (ATS) এক পাকিস্তানি গুপ্তচরকে গ্রেপ্তার করেছে, যার নাম সাহাজাদ। এই সাহাজাদ দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই (ISI)-এর হয়ে কাজ করছিল বলে ATS-এর প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে শুধু যে পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করছিল তা নয়, সেই সঙ্গে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত পেরিয়ে চোরাপথে পণ্য পাচারের সাথেও সরাসরি যুক্ত ছিল। আর এই চোরাচালানের মাধ্যমেই সে ভারতের অভ্যন্তরে চালাত গুপ্তচর চক্র।ATS-এর তরফে প্রকাশিত সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সাহাজাদ পেশায় একজন চোরাচালানকারী হলেও আদতে সে এক প্রশিক্ষিত গুপ্তচর, যার কাজ ছিল সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে প্রসাধনী, মশলা, পোশাক এবং অন্যান্য কম গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র আনার ছত্রছায়ায় ভারতের গোপন তথ্য জোগাড় করে ISI-এর এজেন্টদের কাছে পৌঁছে দেওয়া।

এমনকি, ATS সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সাহাজাদ তার মোবাইল এবং সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট মারফত পাকিস্তানি এজেন্টদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলত এবং ভারতের সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ডিং ফোর্স এবং স্থানীয় প্রশাসনের অবস্থান, নড়াচড়া ও কৌশল সংক্রান্ত গোপন নথিপত্র বা ছবি আদান-প্রদান করত। এতে শুধু দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই নয়, গোটা সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর পড়েছিল বড় রকমের প্রভাব।AT‌S আরও জানিয়েছে, পূর্বসূত্র অনুসারে সাহাজাদের সঙ্গে অন্তত ৩-৪ জনের সক্রিয় যোগাযোগ ছিল, যারা দিল্লি, রাজস্থান ও জম্মু অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এবং তাদের ট্র্যাক করতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোকে যুক্ত করা হয়েছে। সাহাজাদের মোবাইল থেকে পাওয়া হয়েছে কিছু এনক্রিপ্টেড মেসেজ ও ছবি, যা যাচাই করা হচ্ছে।ঘটনার পর মোরাদাবাদে কিছুক্ষণের জন্য আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। তবে পুলিশ তৎপরতায় পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। স্থানীয় থানাগুলিকে সতর্ক রাখা হয়েছে যাতে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না ঘটে।এদিকে ATS জানিয়েছে, ধৃত সাহাজাদের বিরুদ্ধে IPC-র ১৪৮, ১৫২ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে এবং আগামী দিনে আরও ধারাবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, যদি তদন্তে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে আরও স্পষ্ট প্রমাণ মেলে।

Y8NORPSAAZeD2UotbjVm

বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই ভারতীয় সীমান্তে ‘লো-ইনটেনসিটি ইনফিলট্রেশন’ চালিয়ে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে সীমান্তে চোরাচালানের মাধ্যমে কিছু ‘ডিপ কভার এজেন্ট’ পাঠানো হচ্ছে, যারা বাইরে থেকে নিরীহ ব্যবসায়ী বা শ্রমিকের রূপে থাকলেও, ভিতরে ভিতরে গোপন তথ্য পাচারে নিযুক্ত।তবে এখানেই শেষ নয়। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল সিকিউরিটি গ্রিডের সাহায্যে সাহাজাদের ডেটা, যোগাযোগ, ফোন রেকর্ড এবং আর্থিক লেনদেনের খতিয়ে দেখা শুরু করেছে। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, জম্মু ও দিল্লির কিছু এলাকায় হাই অ্যালার্ট জারি হয়েছে এবং সম্ভাব্য সহচরদের গ্রেপ্তারে তল্লাশি শুরু হয়েছে।এদিকে সাহাজাদকে আজ আদালতে পেশ করা হয়েছে। আদালত তাকে ৭ দিনের ATS হেফাজতে পাঠিয়েছে। এই সময়ে তাকে জেরা করে গোটা নেটওয়ার্কের ব্যাপারে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানার চেষ্টা করা হবে।এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, দেশের অভ্যন্তরেও শত্রু থাকতে পারে, যারা অর্থের লোভে কিংবা মতাদর্শের কারণে দেশের গোপন তথ্য শত্রুপক্ষে পাচার করতে দ্বিধা করে না। আর তাই আমাদের প্রতিটি নাগরিককেই সচেতন হতে হবে, সন্দেহজনক কিছু দেখলে সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনকে জানাতে হবে।দেশের প্রতি এই মুহূর্তে সবার থেকে বড় কর্তব্য—সতর্ক থাকা, সচেতন থাকা, এবং দেশের প্রতি বিশ্বাস অটুট রাখা। কারণ, প্রতিটি তথ্যের মূল্য, একেকটা সীমানা রক্ষার চেয়েও বেশি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments