Friday, May 23, 2025
Google search engine
Homeরাজনীতিঅন্যানো রাজনীতি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর

 সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর

Defense Minister issues stern warning against terrorism: দীর্ঘদিন ধরে চলা সীমান্ত সন্ত্রাস, পাকিস্তানের দ্বিচারিতা, এবং কূটনৈতিক বিশ্বাসঘাতকতার বিরুদ্ধে অবশেষে কড়া অবস্থান নিল ভারত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সম্প্রতি এক প্রেস বিবৃতিতে দেশের পক্ষ থেকে এমনই এক সাফ হুঁশিয়ারি দিলেন, যা শুধু প্রতিবেশী পাকিস্তান নয়, গোটা বিশ্ববাসীর কানে পৌঁছে দিয়েছে ভারতের অনমনীয় মনোভাব—সন্ত্রাসবাদকে আর বরদাস্ত করা হবে না, এবার প্রতিটি আঘাতের পাল্টা জবাব দেওয়া হবে বুক ভরা প্রত্যাঘাতে। এই হুঁশিয়ারির মূলে রয়েছে সম্প্রতি সফল হওয়া ‘অপারেশন সিন্ধুর’, যা প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিজেই বলেছেন ভারতের ইতিহাসে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় এবং সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ।পশ্চিমবঙ্গের এক অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, “পহেলগামে সন্ত্রাসবাদীরা আমাদের কপালে আঘাত করেছিল, আমরা তাদের বুকে আঘাত করেছি।” একেবারে যুদ্ধ ঘোষণার মতো কড়া সুরে তিনি বলেন, “ভারত আজ জানিয়ে দিয়েছে, সীমান্তে কোনও অনুপ্রবেশ বা জঙ্গি কার্যকলাপ ঘটলে, তা যুদ্ধের শামিল। আমরা যে কোনও পর্যায়ে যেতে প্রস্তুত।”এই বক্তব্য শুধুই কথার কথা নয়। তথ্য বলছে, গত পঁইত্রিশ-চল্লিশ বছর ধরে ভারত পাকিস্তানের দিক থেকে লাগাতার সন্ত্রাসবাদী হামলার শিকার হচ্ছে। ২০০১ সালে ইসলামাবাদে বসে পাকিস্তান সরকার বলেছিল, তারা আর তাদের মাটি থেকে সন্ত্রাস রপ্তানি করবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে উল্টোটা। ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে আশ্রয় দেওয়া, প্রশিক্ষণ দেওয়া, এবং সীমান্ত অতিক্রম করিয়ে পাঠানো—এটাই পাকিস্তানের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবার স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, পাকিস্তানকে এর জন্য চরম মূল্য দিতে হবে। “তারা যদি মনে করে, পারমাণবিক অস্ত্র দেখিয়ে আমাদের চোখ রাঙানো যাবে, তাহলে তারা ভুল করছে। ভারত এই হুমকি উপেক্ষা করতে শিখেছে,” বলেন তিনি।এই মুহূর্তে ‘অপারেশন সিন্ধুর’ নিয়ে সেনা ও নিরাপত্তা মহলে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই অপারেশনের মাধ্যমে একাধিক সীমান্ত পারাপারের রুট ধ্বংস করা হয়েছে, বহু জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, এবং অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট টার্গেটের মাধ্যমে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে থাকা সন্ত্রাসী সংগঠনের নেতাদের কাঁপিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর কথায় উঠে এসেছে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা—“সন্ত্রাসবাদ এবং আলোচনা একসাথে চলতে পারে না। আর যদি আলোচনা হয়, তা হবে কেবল পাক অধিকৃত কাশ্মীর ফেরত পাওয়ার বিষয়ে।”বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বার্তা একদিকে যেমন পাকিস্তানের প্রতি কড়া চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মহলেও ভারতের কূটনৈতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করবে। কারণ, আজ গোটা বিশ্ব জানে যে ভারতের সেনাবাহিনী শুধু প্রতিরক্ষা নয়, আক্রমণের দিক থেকেও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অধিকারী।এছাড়াও প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “আজ যারা পাকিস্তানের মাটিতে লুকিয়ে আছে, তাদের মনে রাখা উচিত, তারা আর নিরাপদ নয়। ভারতীয় সেনা তাদের প্রত্যেককে নজরবন্দি করে ফেলেছে। কোথাও তারা লুকিয়ে থাকতে পারবে না।”এই বক্তব্যের জেরে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং গোয়েন্দা মহলে। কারণ, বিগত কিছুদিনে পাকিস্তানে অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং জনঅসন্তোষ বেড়েছে, যার সুযোগ নিয়ে ভারতের কৌশলগত অভিযান তাদের আরও কোণঠাসা করে তুলছে।প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর থেকে দেশের প্রতিটি সীমান্তে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। প্রতিটি সেনা ইউনিটকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে এবং সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিকে বলা হয়েছে সন্দেহভাজন গতিবিধি দেখলেই সঙ্গে সঙ্গে রিপোর্ট করতে।পশ্চিমবঙ্গ, জম্মু-কাশ্মীর, পাঞ্জাব, রাজস্থান এবং গুজরাটের সীমান্তবর্তী এলাকায় বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। সামরিক গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, সেনাবাহিনীর আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি, স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণ এবং ইলেকট্রনিক ইন্টারসেপশন বাড়ানো হয়েছে।

peoplesreporter%2F2025 04 23%2Fl53oatjp%2Frajnath

আন্তর্জাতিক মহলে এই বক্তব্য ইতিমধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান—সব দেশই ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে। এমনকি রাশিয়াও ভারতের পক্ষে কূটনৈতিক স্তরে বক্তব্য রাখছে, যা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।ভারতের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল বিনয় ত্যাগী বলেন, “এই বক্তব্য কেবল রাজনৈতিক নয়, এটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের পক্ষ থেকে এবার স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, আমরা আর পাল্টা মার খেতে রাজি নই।”পাকিস্তানের একটি সংবাদমাধ্যমে লিখেছে, “ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বক্তব্য শুধু হুঁশিয়ারি নয়, এটি স্পষ্ট যুদ্ধঘোষণা। পাকিস্তানের উচিত এখনই কূটনৈতিকভাবে সমঝোতার পথ খোঁজা।”ভারতের বর্তমান অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট—যে কোনো সন্ত্রাসী আক্রমণ ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বলে গণ্য হবে এবং তার জবাবও যুদ্ধক্ষেত্রেই দেওয়া হবে। এই অবস্থানে ভারত একদিকে যেমন নিজের প্রতিরক্ষা নিরাপদ করছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক পরিসরে এক শক্তিশালী কণ্ঠ হয়ে উঠছে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে।অপারেশন সিন্ধুর মতো অভিযানগুলি এখন কেবল প্রতিরক্ষা নয়, প্রতিরোধের নীতিকেও সামনে আনছে। আর প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর এই বক্তব্য আজ শুধু পাকিস্তানের নয়, বিশ্বের প্রতিটি সন্ত্রাসী সংগঠনের কানে গিয়ে পৌঁছেছে—“ভারত আর চুপ থাকবে না।”

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments