‘Red alert’ issued in Pakistan, airspace closed:ভারতের অপারেশন সিন্দুরের পর থেকেই কাঁপছে পাকিস্তান। গভীর রাতে ভারতীয় বায়ুসেনার আকস্মিক হামলায় জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তইবা এবং জামাত-উদ-দাওয়ার একাধিক ঘাঁটি বিধ্বস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় পাকিস্তান সরকার দেশজুড়ে রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ দ্রুত দেশের প্রতিরক্ষা পরিস্থিতি পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছেন। ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার জন্য পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক আকাশসীমা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে ইসলামাবাদ, লাহোর ও করাচি সহ বেশ কয়েকটি বড় শহরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
পাকিস্তানের আইএসপিআর-এর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানিয়েছেন, “ভারতীয় বায়ুসেনার হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন জইশ ও লস্করের শীর্ষ নেতা রয়েছেন। হামলার কেন্দ্রে ছিল দক্ষিণ পাঞ্জাবের বাহাওয়ালপুর শহরের আহমেদপুর শরকিয়া মসজিদ, যা জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহারের গোপন ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত।”
মাসুদ আজহারের আত্মীয় ইমরান আজহার এই হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন বলে খবর। ভারত স্পষ্ট জানিয়েছে, “এই হামলা ছিল কেবলমাত্র সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলির উপর। পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের উপর কোনও হামলা চালানো হয়নি।”
পাকিস্তানের অন্যতম কট্টর জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার সদর দফতর মুরিদকে-তেও হামলা চালানো হয়। জানা গিয়েছে, সেখানে লস্করের শীর্ষ নেতা আবু হামজা নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি জামাত-উদ-দাওয়ার সদর দফতরেও হামলার কারণে হাফিজ সইদের নিরাপত্তা আরও কড়া করা হয়েছে। পাকিস্তানের পুলিশ সূত্রে খবর, ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডি জুড়ে একাধিক জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
পাকিস্তানজুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। পেশোয়ারের বাসিন্দা রফিক আনসারি জানালেন, “গভীর রাতে যখন এই হামলা হয়, তখন আমার স্ত্রী-সন্তান সবাই আতঙ্কে চিৎকার করতে থাকে। আমরা জানি না পরবর্তী হামলা কোথায় হবে। এখন প্রতিদিন মনে হচ্ছে, আমরা যুদ্ধে আছি।”
পাকিস্তানের শেয়ারবাজারেও ধস নেমেছে। করাচি স্টক এক্সচেঞ্জের সিনিয়র ট্রেডার জামিল খান বললেন, “ভারতীয় হামলার খবর ছড়াতেই করাচি স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক এক লাফে ৫০০ পয়েন্ট নেমে গেছে। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা পাকিস্তানে বিনিয়োগে আতঙ্কিত।”
পাকিস্তানের সরকারের তরফে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে দ্রুত হস্তক্ষেপের আবেদন জানানো হয়েছে। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, “ভারতের এই হামলা সরাসরি আঞ্চলিক শান্তির উপর আঘাত। জাতিসংঘ এবং ওআইসির উচিত অবিলম্বে ভারতের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা।”
তবে, ভারতের তরফে জানানো হয়েছে, “এই হামলা ছিল সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে। ভারতের উপর একের পর এক সন্ত্রাসী হামলার পরিণাম হিসেবেই এই স্ট্রাইক চালানো হয়েছে। এটি পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে কোনও হামলা নয়।”
এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। ইসলামাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ শায়লা নাসির বলেন, “হামলার পর থেকেই আমাদের হাসপাতালে আহতদের ভিড় বেড়েছে। বেশিরভাগই বিস্ফোরণে দগ্ধ এবং গুরুতর আহত। হাসপাতালের সব চিকিৎসক ও নার্সদের রেডি থাকতে বলা হয়েছে।”
পাকিস্তানের জাতীয় সুরক্ষা বিশ্লেষক আসিফ আলী মনে করছেন, “ভারতের এই হামলা পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার বড়সড় ফাঁকফোকর উন্মোচন করেছে। পাকিস্তান যতই দাবি করুক, তার আকাশসীমা সুরক্ষিত নয়। আর এই আঘাত পাকিস্তানের ভাবমূর্তিতেও বড় আঘাত। আন্তর্জাতিক মহলও এখন পাকিস্তানের পাশে দাঁড়াতে দ্বিধাগ্রস্ত।”
এই হামলার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত জুড়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব, রাজস্থান সহ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, “এই হামলা ছিল সুনির্দিষ্ট এবং সফল। তবে ভবিষ্যতে আরও বড় আঘাত আনার জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত।”
এই অবস্থায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ কী পদক্ষেপ নেন, সেটাই এখন দেখার। তার উপরেই নির্ভর করছে এই উত্তেজনার পরবর্তী অধ্যায়। পাকিস্তান কি পাল্টা হামলা চালাবে? নাকি আন্তর্জাতিক মহলের শরণাপন্ন হবে? আপাতত, গোটা পাকিস্তান জুড়ে আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তা।