Wearing ‘Sindoor’ in celebration of the success of Operation Sindoor:মালদা শহরের ফোয়ারা মোড়ে বুধবার সকালটা যেন অন্যরকম ছিল—সাধারণ মানুষের কপালে সিঁদুর পরিয়ে বিজয়োল্লাসে মাতলেন বিজেপি যুব মোর্চার কর্মীরা, আর এই উচ্ছ্বাসের পেছনে রয়েছে ভারতীয় সেনার সদ্যসমাপ্ত ‘অপারেশন সিঁদুর’। এই অভিযানটি ছিল পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটিগুলির বিরুদ্ধে এক নির্ভুল প্রত্যাঘাত, যা পহেলগাঁওয়ে নিরীহ হিন্দু পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার বদলা হিসেবে পরিচালিত হয়। এই হামলায় ২৬ জন নিরীহ প্রাণ হারান, যার মধ্যে ছিলেন নৌসেনার অফিসার লেফটেন্যান্ট বিনয় নরওয়াল, যিনি মাত্র ছয় দিন আগে বিয়ে করেছিলেন। এই ঘটনার পর তাঁর স্ত্রী হিমাংশী নরওয়াল বলেন, “সেদিন আমি কেঁদে ছিলাম। আজ ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানাই এই বদলা নেওয়ার জন্য। সেনাবাহিনীকে জানাই এই প্রতিশোধ নিয়ে যাওয়ার জন্য। তবে আমার স্বামীর আত্মা শান্তি পাবে।”
অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে ভারতীয় সেনা পাকিস্তানের মাটিতে অবস্থিত ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় এবং কমপক্ষে ১০০ জন জঙ্গিকে নিকেশ করে, যা দেশের প্রতিরক্ষা কৌশলের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল। এই অভিযানের নাম ‘সিঁদুর’ রাখা হয়েছে হিন্দু ধর্মের বিবাহিত নারীদের সিঁথিতে সিঁদুর পরার প্রথা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে, যা সাহস, ত্যাগ এবং প্রতিশ্রুতির প্রতীক। পহেলগাঁও হামলায় হিন্দু মহিলাদের সিঁথির সিঁদুর মুছে গিয়েছিল, আর এই অপারেশনের মাধ্যমে সেই অপমানের বদলা নেওয়া হয়েছে।
মালদায় এই বিজয়োল্লাস কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি যুব মোর্চার নেতা শুভঙ্কর চম্পটি, বিশ্বজিৎ রায়, বিজেপি নেতা সন্তোষ রায় সহ অন্যান্যরা। তারা সাধারণ পথ চলতি মানুষের কপালে ও সিঁথিতে সিঁদুর দিয়ে অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য উদযাপন করেন। এই উদযাপন শুধু মালদায় সীমাবদ্ধ ছিল না; শিলিগুড়িতেও নাগরিকরা রাস্তায় নেমে ‘ইন্ডিয়ান আর্মি জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেন এবং জাতীয় পতাকা হাতে দেশের সাফল্য উদযাপন করেন।
অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রশংসা এসেছে। প্রাক্তন ক্রিকেটার বীরেন্দ্র সেওয়াগ টুইট করে বলেন, “কেউ যদি পাথর ছোড়ে, আপনিও ফুল ছুড়ে দিন, তবে গামলার সঙ্গে।” গৌতম গম্ভীর, সচিন তেন্ডুলকর, ঝুলন গোস্বামী, শিখর ধাওয়ান সহ অনেকেই সেনার প্রতি সম্মান জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। রাজনৈতিক মহলেও এই অভিযানের প্রশংসা হয়েছে; মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল গান্ধী, অখিলেশ যাদব, মায়াবতী, এম কে স্ট্যালিন প্রমুখ নেতারা সেনাবাহিনীকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।
এই অপারেশন ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশলের এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যেখানে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীর এই সাফল্য দেশের মানুষের মধ্যে গর্বের অনুভূতি জাগিয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন আরও কঠোর পদক্ষেপের প্রত্যাশা তৈরি করেছে।