2027 Prajant India match will be a hybrid model! : অবশেষে দীর্ঘ জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আইসিসি ঘোষণা করল যে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আগামী ২০২৭ সাল পর্যন্ত ম্যাচগুলো হাইব্রিড মডেলে অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের ম্যাচ নিয়ে সব সময়ই উত্তেজনা তুঙ্গে থাকে, আর এই সিদ্ধান্ত সেই উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে আরও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
হাইব্রিড মডেল মানে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার ম্যাচ নিরপেক্ষ ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। এটি এমন এক সমাধান যেখানে দুই দেশের রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তার জটিলতার কারণে খেলাগুলো নিরপেক্ষ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এই মডেলের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হচ্ছে যে, দুই দেশের খেলোয়াড়রা কোনো ধরনের চাপ ছাড়াই তাদের খেলা চালিয়ে যেতে পারবেন।
)
২০২৫ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজক দেশ পাকিস্তান। তবে ভারত আগেই জানিয়ে দিয়েছিল যে, তারা পাকিস্তানে খেলতে যাবে না। এই পরিস্থিতিতে, পাকিস্তানের আয়োজক হিসেবে সম্মান রক্ষা করতে এবং ভারতের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আইসিসি হাইব্রিড মডেলের প্রস্তাব দেয়। এই মডেল অনুযায়ী, ভারতের ম্যাচগুলো পাকিস্তান ছাড়া অন্য কোনো নিরপেক্ষ দেশে অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সংযুক্ত আরব আমিরাত বা শ্রীলঙ্কা হতে পারে এই নিরপেক্ষ ভেন্যু।
২০২৫ সালে ভারতে মহিলা বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে। তবে, পাকিস্তানের দল ভারতের মাটিতে না এসে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলবে। একইভাবে, ২০২৬ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে আয়োজিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার ম্যাচ শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হবে।
পাকিস্তান শুরুতে এই মডেল নিয়ে খুশি ছিল না। তারা দাবি করেছিল যে, তাদের মাটিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পুরোপুরি আয়োজন করার অধিকার রয়েছে। তবে, আন্তর্জাতিক চাপ এবং আইসিসি-র মধ্যস্থতায় তারা অবশেষে এই মডেল মেনে নেয়। পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডের এক কর্মকর্তা বলেন, “এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই কঠিন ছিল, তবে আমরা বিশ্বাস করি এটি দীর্ঘমেয়াদে ভালো ফল দেবে এবং দুই দেশের মধ্যে ক্রীড়া সম্পর্ক বজায় রাখতে সহায়ক হবে।”

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (BCCI) শুরু থেকেই বলেছে যে, খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা তাদের জন্য সর্বাধিক অগ্রাধিকার। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় ইভেন্টে অংশগ্রহণ করা, কিন্তু খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিয়ে আপস করা যাবে না। হাইব্রিড মডেল সেই সমস্যার সমাধান করেছে।”
ভারত এবং পাকিস্তানের ম্যাচ সব সময়ই দুই দেশের মানুষের জন্য আবেগের বিষয়। তবে, ম্যাচগুলো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে হওয়ায় স্থানীয় সমর্থকরা তাদের প্রিয় দলকে সরাসরি মাঠে সমর্থন করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। এর পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক ভেন্যুগুলোতে আয়োজিত এই ম্যাচগুলো ওইসব দেশের পর্যটন এবং অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এই হাইব্রিড মডেল ২০২৭ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকলেও, এটি দীর্ঘমেয়াদী সমাধান নয়। দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক উন্নত না হলে ভবিষ্যতে এমন আরো মডেল তৈরি করতে হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মডেল থেকে শিখে ভবিষ্যতে ক্রীড়া এবং রাজনীতির মধ্যে একটি পরিষ্কার সীমারেখা টানা উচিত।
আইসিসি-র হাইব্রিড মডেল ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে ম্যাচ আয়োজনের ক্ষেত্রে একটি কার্যকর সমাধান হিসেবে দেখা যাচ্ছে। যদিও এটি দুই দেশের সম্পর্কের স্থায়ী সমাধান নয়, তবে এটি সাময়িকভাবে দুই দেশের ক্রীড়াপ্রেমীদের উত্তেজনা বজায় রাখবে। ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে হয়তো এই মডেলের প্রয়োজন আর থাকবে না।