মমতার বাংলায় মহিলারা সুরক্ষিত নয় : রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সম্প্রতি বাংলায় মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট কেন্দ্রের কাছে জমা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলায় মহিলারা সুরক্ষিত নন।” শিলিগুড়ির সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল এই মন্তব্য করেন এবং রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা এবং নারী নির্যাতনের ঘটনাবলীর প্রতি তাঁর চিন্তা প্রকাশ করেন। কোচবিহার ও চোপড়ার মতো উত্তরবঙ্গের এলাকাগুলিতে নারী নির্যাতনের ঘটনা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন তিনি। এই বিষয়গুলি নিয়ে রাজ্যপাল দিল্লি ফিরে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দেবেন এবং বলেন যে রাজভবনের দরজা সকল নির্যাতিতার জন্য খোলা রয়েছে।

এই রাজ্যপালের মন্তব্য ও পদক্ষেপ রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে প্রচুর আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং রাজ্য সরকারের মহিলা নিরাপত্তা ও সামাজিক সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। রাজ্যপালের এই পদক্ষেপ আসন্ন দিনগুলিতে রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের এক নতুন দিশা নির্দেশ করতে পারে।রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকে এ বিষয়ে কোনো অফিসিয়াল মন্তব্য এখনও প্রাপ্ত হয়নি। সরকারি প্রতিনিধিরা এই অভিযোগগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে চিহ্নিত করে থাকেন। তবে, রাজ্যের নাগরিক সমাজ এবং মহিলা অধিকার সংগঠনগুলি এই ইস্যুতে খুবই সক্রিয় হয়ে উঠেছে এবং নিরাপত্তা প্রশ্নে সরকারের প্রতি তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। নানা মহল থেকে একটি সুষ্ঠু, স্বচ্ছ তদন্তের দাবি উঠেছে, যাতে সঠিক ঘটনা এবং পরিস্থিতির সঠিক তথ্য উদ্ঘাটিত হয়।
রাজ্যপালের এই মন্তব্য এবং পদক্ষেপ যদিও রাজনৈতিক মহলে বিভিন্ন মতামত এবং প্রতিক্রিয়া জন্ম দিয়েছে, তবুও এটি একটি বৃহত্তর সামাজিক সচেতনতার সৃষ্টি করতে চলেছে। বাংলার মাটিতে মহিলাদের নিরাপত্তা একটি পুনরাবৃত্তি নির্যাতনের চিত্র ফুটে উঠছে, যা সরকারের প্রতি নতুন করে প্রশ্ন রাখছে। রাজ্যপাল এই বিষয়ে কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট পেশ করার পরিকল্পনা করেছেন এবং তা হয়তো ভবিষ্যতে আরও বড় কোনো রাজনৈতিক ও সামাজিক আলোচনার জন্ম দেবে।
আমরা কীভাবে আমাদের সমাজের সবচেয়ে দুর্বল সদস্যদের সুরক্ষা নিশ্চিত করছি, এবং রাজনৈতিক নেতারা কীভাবে তাদের ক্ষমতাকে এই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছেন, সে বিষয়ে গভীর প্রতিফলন প্রয়োজন। এই বিষয়গুলি নিয়ে সচেতনতা এবং আলোচনা যত বাড়বে, ততই আমাদের সমাজের উন্নতি সম্ভব হবে। সব মিলিয়ে, এটি একটি জটিল পরিস্থিতি, যার সমাধান সহজ নয়, কিন্তু সমাধানের পথে প্রথম ধাপ হলো সমস্যাটির প্রকৃত বিস্তারিত অনুধাবন করা এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া।
আরও পড়ুনঃ-সংশোধিত নতুন আইনের বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতি আইনজীবীদের