বুধবার দুপুরে রাণীগঞ্জের দামোদর নদীতে স্নান করতে গিয়ে নিখোঁজ হন ২২ বছর বয়সী যুবক অভিজিৎ মন্ডল। তার সঙ্গে ছিলেন চার বন্ধু। দুদিন ধরে উদ্ধারকারী দল তল্লাশি চালিয়েও তার কোনো হদিস পায়নি। অবশেষে শুক্রবার ভোররাতে নদীতে ভাসমান অবস্থায় তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য দেহটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিজিৎ মন্ডল রাণীগঞ্জের বাসিন্দা। বুধবার দুপুরে তিনি তার বন্ধুদের সঙ্গে দামোদর নদীতে স্নান করতে যান। স্নানের সময় হঠাৎই তিনি নদীতে তলিয়ে যান। তার বন্ধুদের চেষ্টার পরও তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তল্লাশি শুরু করে। দুদিনের চেষ্টার পর শুক্রবার ভোররাতে অভিজিতের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় অভিজিতের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার বাবা-মা ও আত্মীয়স্বজনের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, অভিজিৎ ছিল খুবই হাসিখুশি ও ভালো ছেলে। তার অকাল মৃত্যুতে পুরো গ্রাম শোকাহত।
স্থানীয় প্রশাসন এই ধরনের ঘটনা এড়াতে নদীতে স্নান নিষিদ্ধ করেছে। তবে কিছু যুবক এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নদীতে নামেন, যা দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও এই ধরনের ঘটনা ঘটছে, যা উদ্বেগজনক।
স্থানীয় বাসিন্দা ভগীরথ ঘোষ জানান, তিনি সকালে নদীর পাড়ে প্রাতর্ভ্রমণে গিয়ে দেখেন কয়েকজন কিশোর নদে স্নান করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি তাদের ঘাট ছেড়ে অন্য দিকে যেতে বারণ করেছিলেন। কিন্তু তারা তার কথা না শুনে ঘাট থেকে অনেকটা দূরে চলে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা তলিয়ে যায়। এই দৃশ্য দেখে তিনি স্থানীয় কাউন্সিলরকে ফোন করেন, যিনি পুলিশকে খবর দেন। এরপর উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তল্লাশি শুরু করে।
এই ধরনের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে, প্রশাসন ও স্থানীয়রা আরও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। নদীতে স্নান করতে যাওয়ার আগে অবশ্যই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া, নদীর পাড়ে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
অভিজিৎ মন্ডলের অকাল মৃত্যু শুধু তার পরিবারকেই নয়, পুরো গ্রামকেই শোকাহত করেছে। এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, নদীতে স্নান করার সময় সতর্কতা অবলম্বন কতটা গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসন ও স্থানীয়দের যৌথ উদ্যোগে এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব।
“