Thursday, April 10, 2025
Google search engine
HomeUncategorisedআসানসোলে চাকরি হারাদের ডিআই অফিস ঘেরাও: এক প্রতিবাদী সংগ্রামের কাহিনী

আসানসোলে চাকরি হারাদের ডিআই অফিস ঘেরাও: এক প্রতিবাদী সংগ্রামের কাহিনী

Screenshot 2025 04 09 235332

Jobless people surround DI office in Asansol: আজকের দিনটি আসানসোলের জন্য এক বিরাট ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যখন গতকাল, যোগ্য শিক্ষক ও শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের সদস্যরা এক প্রতিবাদী কর্মসূচি শুরু করেন। এই আন্দোলন, যা ছিল মূলত চাকরি হারানো শিক্ষক, শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মীদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ এবং অসন্তোষের প্রতিফলন, শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অবরোধের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। এটি ছিল একটি সমাবেশ, যার লক্ষ্য ছিল পশ্চিম বর্ধমান জেলার শিক্ষা বিভাগের প্রতি তাদের দাবিগুলিকে জানানো। কিন্তু তার পরেই ঘটনাটি আরও জটিল হয়ে ওঠে, যখন বিক্ষোভকারীরা আসানসোলের সুকান্ত ময়দানের কাছে ডিআই অফিসের গেটের সামনে পৌঁছান এবং সেখানে নিজেদের দাবি জানিয়ে অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন।

কর্মসূচি শুরুর আগে, আসানসোল আশ্রম মোড়ের জি টি রোডে শিক্ষকেরা প্রথমে রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে কর্মীদের প্রতি অবিচারের বিষয়টি সরকার এবং সাধারণ জনগণের কাছে তুলে ধরা। এই পথ অবরোধের কারণে সকাল থেকেই গাড়ির চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, যা শহরের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলে। কিন্তু এটি ছিল শুধু প্রথম ধাপ; বিক্ষোভকারীরা এরপর DI অফিসের দিকে এগিয়ে গিয়ে অফিসের গেট এবং ক্যাম্পাসে তালা ঝুলিয়ে দেন, যা শহরের সরকারি দপ্তরের কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়।

এই প্রতিবাদ কর্মসূচির মূল কারণ ছিল পশ্চিম বর্ধমান জেলায় প্রায় ৩৪৭ জন শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। অধিকাংশই ভিন জেলার, কিন্তু এদের মধ্যে ১৫০ জনের বেশি কর্মী গতকালকার আন্দোলনে অংশ নেন, যার মধ্যে ছিলেন সক্রিয় কর্মীরা। সুশান্ত বর্মণ, একজন শিক্ষক, আন্দোলনের কথা বলেন: “আমরা এখানে এসেছি আমাদের ন্যায্য অধিকারকে দাবি করতে। দিনের পর দিন আমাদের প্রতি অবিচার হয়েছে, এবং এখন আমাদের ক্ষোভ প্রকাশের সময় এসেছে।”

Screenshot 2025 04 09 235454

প্রতিবাদী শিক্ষকদের মতে, পূর্বের সরকারী সিদ্ধান্তের ফলে অনেক শিক্ষকদের চাকরি চলে গেছে এবং এখনো পর্যন্ত কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাছাড়া, যেসব শিক্ষকরা চাকরি হারিয়েছেন, তারা বেশিরভাগই পেশাগতভাবে দক্ষ ছিলেন, কিন্তু শুধুমাত্র সরকারের নীতি এবং প্রশাসনিক অবহেলায় তাঁদের চাকরি চলে গেছে। এক শিক্ষক, মনোজী মাইতি বলেন, “আমরা বছরভর কঠোর পরিশ্রম করেছি, কিন্তু আজ আমাদেরকে না বুঝে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সরকার আমাদের প্রতি অত্যন্ত অমানবিক আচরণ করেছে।”

এদিকে, প্রাথমিকভাবে মনে হতে পারে যে এই আন্দোলন শুধুমাত্র কিছু নির্দিষ্ট কর্মীদের ক্ষোভের প্রতিফলন, তবে এর সামাজিক প্রভাব অনেক গভীরে রয়েছে। পশ্চিম বর্ধমান জেলায় শিক্ষাব্যবস্থার ওপর এই প্রতিবাদ কেমন প্রভাব ফেলবে, তা এখনই বলা কঠিন। বিক্ষোভকারীরা প্রশাসনের কাছে তাগিদ দিয়েছেন যে, তারা যেন দ্রুত তাদের সমস্যার সমাধান করেন। এই আন্দোলন শুধু শিক্ষকদের ক্ষোভই নয়, বরং কর্মী, শ্রমিক, এবং সাধারণ মানুষের অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে একটি বৃহত্তর সংগ্রাম হিসেবেও দেখা হচ্ছে। আসানসোল শহরের সাধারণ জনগণ এবং অন্যান্য কর্মীরা, যারা এই সমস্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত নন, তাদেরও কাছে এটি একটি সতর্কতা এবং তাদের অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments